জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান হিসেবে “ডিজিটাল বাংলাদেশ পুরস্কার-২০২১” অর্জন করল ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন

জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান হিসেবে “ডিজিটাল বাংলাদেশ পুরস্কার-২০২১” অর্জন করল ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন

এইচ এম জাকিরঃ
জাতীয় পর্যায়ে (সাধারণ) সরকারী শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান হিসেবে “ডিজিটাল বাংলাদেশ পুরস্কার-২০২১” অর্জন করল ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন-ডিএনসিসি।
  ১২ই ডিসেম্বর, ২০২১ খ্রিস্টাব্দ তারিখ  রবিবার সকালে রাজধানীর শেরে বাংলা নগর এলাকায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস-২০২১ উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ডিএনসিসি প্রবর্তিত “সবার ঢাকা অ্যাপস” এবং “ডিজিটাল হাট” উদ্যোগের জন্য ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন “ডিজিটাল বাংলাদেশ পুরস্কার-২০২১” অর্জন করে।
       গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশের মূলমন্ত্র জনগণের হাতের মুঠোয় নাগরিক সেবা পৌঁছানোর লক্ষ্যে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশেনের মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম এর নির্দেশনায় ডিএনসিসি গত ১০ জানুয়ারী, ২০২১ তারিখ চালু করে সিটিজেন এনগেইজমেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্ল্যাটফর্ম “সবার ঢাকা অ্যাপস”। এই অ্যাপসটির মাধ্যমে ডিএনসিসির আওতাধীন এলাকাসমূহের নাগরিকগণ তাদের এলাকার রাস্তা, মশা, সড়ক, বাতি, আবর্জনা, জলাবদ্ধতা, পাবলিক টয়লেট, নর্দমা ও অবৈধ স্থাপনা এই আটটি বিষয়ে সমস্যার কথা সরাসরি সিটি কর্পোরেশন বরাবর তুলে ধরতে পারেন এবং সুস্থ, সচল ও আধুনিক ঢাকা গড়ে তুলতে তাদের সুপরামর্শ প্রদান করতে পারেন।
       নাগরিকগণ সমস্যার স্থান থেকে মোবাইলে ছবি তুলে সমস্যা “সবার ঢাকা অ্যাপস”-এ জমা দেয়ার সাথে সাথে অ্যাপসটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে তার লোকেশন ট্র্যাক করে ডিএনসিসি’র ওয়ার্ড এবং অঞ্চল নির্ধারণ করে যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট পৌঁছে দেয়। ডিএনসিসি কর্মকর্তাগণ তাদের ম্যানেজমেন্ট প্ল্যাটফর্ম থেকে সমস্যাগুলো যাচাই-বাছাই করে সমাধানের পদক্ষেপ নেন। সমস্যা সমাধানে কর্মকর্তাদের গৃহীত প্রত্যেকটি পদক্ষেপের আপডেট অ্যাপস ব্যবহারকারী নোটিফিকেশনের মাধ্যমে পেয়ে থাকেন এবং সমাধান কাউন্টার থেকে দেখতে পারেন।
“সবার ঢাকা অ্যাপস” চালু করার ফলে ডিএনসিসি’র সাথে নাগরিকগণ নিরবিচ্ছিন্নভাবে সংযুক্ত হয়েছেন। অদ্যাবধি প্রায় ৩০ হাজার নাগরিক রেজিস্ট্রেশনপূর্বক সবার ঢাকা অ্যাপসের মাধ্যমে তাদের এলাকার সর্বমোট ১১ হাজার ৩৬টি সমস্যা ডিএনসিসিকে জানিয়েছে। যার মধ্যে ডিএনসিসি কর্তৃক ৯ হাজার ৮ শত ৭৬টি সমস্যার সমাধান করা হয়েছে, এক্ষেত্রে সমাধানের হার ৯০ শতাংশ। বাকি ১ হাজার ১ শত ৬০টি সমস্যা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। প্রযুক্তির ব্যবহারে নাগরিকদের সাথে এই নিরবিচ্ছিন্ন সংযোগের ফলে ডিএনসিসি’র সেবা হয়েছে দ্রুতগামী ও সময়োপযোগী অর্থাৎ নাগরিক সেবার মানের সার্বিক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে।
       আর “ডিজিটাল হাট” অনলাইন প্ল্যাটফর্মটি (www.digitalhaat.com) একটি কাস্টমাইজ ওয়েবসাইট। সরাসরি বিক্রেতা ব্যতীত দেশের ৬৮৬টি অনলাইন ডিজিটাল হাট এই প্ল্যাটফর্মে যুক্ত ছিল। এখানে ক্রেতারা যেমন নির্ধারিত দামের পশু ক্রয় করতে পারে আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে দরদামও করতে পারে। অনলাইনে পেমেন্ট পরার পাশাপাশি নগদ লেনদেন করারও সুযোগ রয়েছে চাইলে স্ক্রো সেবাও ব্যবহার করা যায়।
       ঢাকা উত্তর সিটি কপোর্রেশন করোনা সংক্রমণের কারণে ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষ্যে অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে যাওয়া খামারী ও কৃষকদের পাশে দাঁড়াতে এবং করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুঝুঁকি কমাতেই এই উদ্যোগ নেয়।
       “ডিজিটাল হাট” এর অন্যতম গুরুত্বপূণৃ বিষয় ছিল গরু জবাই, মাংস কাটা ও হোমডেলিভারী সেবা। এ বছর ২০২১ সালে কোরবানীর ঈদকে কেন্দ্র করে চালু হওয়া দেশব্যাপী অনলাইনে কোরবানীর পশুর হাট থেকে মোট পশু বিক্রি হয়েছে ৩ লাখ ৮৭ হাজার ৫ শত ৭৯টি, এগুলোর মধ্যে গরু ও মহিষ ২ লাখ ৯৬ হাজার ৭ শত ১০টি। যার মোট মূল্য ২ হাজার ৭ শত ৩৫ কোটি ১১ লাখ ১৫ হাজার ৬ শত ৭৮ টাকা। এবার ২৬৫টি পশু স্লটারিং করে তাদের বাসায় পৌঁছে দেয়া হয়েছে। এই প্ল্যাটফর্মে সারাদেশের ১ হাজার ৮ শত ৪৩টি পশুর হাট থেকে বিশাল পরিমাণ পশু অনলাইনে বিক্রি হওয়ার কারণে কমপক্ষে ১০ লক্ষ মানুষ কোভিড-১৯ সংক্রমণ থেকে বেঁচে গেছে।
       তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালী সংযুক্ত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।
       স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে একটি উদ্যান ও আবক্ষ ভাস্কর্য উদ্বোধনের জন্য ডিএনসিসি মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম বর্তমানে তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় অবস্থানের কারণে তাঁর পক্ষে পুরস্কার গ্রহণ করেন ভারপ্রাপ্ত মেয়র জামাল মোস্তফা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সেলিম রেজা।