বাগেরহাটে বিপর্যস্ত জন জীবন, বিরামহীন বৃষ্টি, ক্ষয়ক্ষতির পরিমান অর্ধ কোটি টাকা

বাগেরহাটে বিপর্যস্ত জন জীবন, বিরামহীন বৃষ্টি, ক্ষয়ক্ষতির পরিমান অর্ধ কোটি টাকা

বাগেরহাট প্রতিনিধিঃ

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘু চাপের প্রভাবে মোংলা সমুদ্র বন্দরসহ উপকূলীয় অঞ্চলে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অফিস। গত দুুইদিনে বৃহস্পতিবার ভোর থেকেই শুক্রবার পর্যন্ত জেলার বেশিরভাগ এলাকায় মুশুল ধারে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। দুপুর নাগাদ বৃষ্টির পরিমান কমলেও দেখা মেলেনি সুর্যের। হঠাৎ বৃষ্টিতে সমস্যায় পড়েছে অফিস গামী ও খেটে খাওয়া সাধারন মানুষ।
সকালে শুরু হওয়া শারদীয় দূর্গা পূজা উদযাপনেও সমস্যায় পড়েছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।

তবে বৈরি আবহাওয়ার মধ্যেও মোংলা বন্দরের সকল কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানিয়েছেন মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের ডেপুটি হারবার মাস্টার ক্যাপ্টেন মোঃ শাহাদাত হোসেন। বাগেরহাটসহ উপকূলীয় অঞ্চলে এ ধরণের বৃষ্টিপাত আরও দুই একদিন থাকবে বলে জানিয়েছেন মোংলা আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক মোহাম্মাদ আলী।


বৃষ্টির কারণে সকাল থেকেই রাস্তাঘাট ফাকা ছিল। ছাতা নিয়ে কিছু মানুষকে খুব জরুরী কাজে বের হতে দেখা গেছে। বাগেরহাট শহরের শালতলা এলাকার রিকশা চালক আলমগীর বলেন, বেলা ১১ টা পর্যন্ত যখন বৃষ্টি কমেনি, তখন পলিথিন পেচিয়ে রাস্তায় বের হলাম। ঘরে বসে থাকলে তো আর বাড়িতে চাল যাবে না। আলমগীরের মত কিছু রিকশা চালক ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদেরই রাস্তায় দেখা গেছে। ছাতা নিয়ে নিজ গন্তব্যে পৌছেছেন বৃষ্টির মধ্যেও।


এদিকে এই অবিরাম বৃস্টিতে মোড়েলগঞ্জ উপজেলায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে, প্রায় অর্ধ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এই এলাকার মানুষের আয়ের একমাত্র উৎস হল ঘের, আর এই ঘের সব তলিয়ে একাকার হয়ে গেছে। মাছ চাসিদের সাথে কথা বলে জানা যায় তৈয়ব হাওলাদারের ১৪/১৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে, তাপস হালদার এর ২/৩ লাখ টাকা, উজ্জল মন্ডলের ২/৩ লাখ টাকা, রঞ্জিত পাইকের ১/৩ লাখ টাকা, শাওন হাওলাদার এর ১৫/২০ লাখ টাকা, তোতা মিয়ার ৩/৪ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। অনেক লোকের রান্না ঘর ও থাকার ঘর ও তলিয়ে গেছে। যাদের রান্না ঘর তলিয়ে গেছে তারা দোকান থেকে শুকনা খাবার এনে খাচ্ছে। যারা ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে ঘেরে মাছ ছেড়ে ছিল তারা রাস্তায় বসে শুধুই বিলাপ করছে। চড়া শুধে লোন নিয়ে মাছ ছেড়ে ছিল সুর্নিমল মন্ডল, তিনি বলেন আমার সব সেষ হয়ে গেল, কি খাব আর কি দিয়ে দেনা শোধ করব।


এদিকে মোংলা আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক মোহাম্মাদ আলী বলেন, বঙ্গোপসগারে সৃষ্ট লঘূ চাপের কারণে সকাল থেকে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। দুপুর পর্যন্ত আমরা ৩৯ মি.মি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছি। আগামী দুই-তিনদিন এধরণেল বৃষ্টিপাত থাকবে।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের ডেপুটি হারবার মাস্টার ক্যাপ্টেন মোঃ শাহাদাত হোসেন বলেন, মোংলায় বৃষ্টিপাত হলেও বন্দরের সকল কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে। বন্দরে জাহাজ আগমন, নির্গমন, খালাস ও বোঝাই সবই চলমান রয়েছে।এদিকে শুক্রবার ভোর থেকে বাগেরহাটের
শরনখোলা উপজেলায় ভারী বর্ষনে আঞ্চলিক মহাসড়কে ভাঙ্গন,গাছ উপড়ে পড়া ও খাদ্য গুদাম, পোস্ট অফিস,ওবদা অফিস সহ গ্রাম পানি বন্দী। গাছ পড়ে মানুষের চলাচলে সমস্যার সৃষ্টি হলে তাৎক্ষণিক ভাবে শরনখোলা ফায়ার সার্ভিসের নিরলস চেষ্টায় রাস্তা পরিস্কার করছেন।